Slide Left Slide Right
News Image
News Image
News Image
বিশেষ সংবাদ

Published :

<span class="center">বগুড়ার সস্তা মার্কেটে ৫০ থেকে</span> <span class="center">৫০০ টাকায় ঈদের কেনাকাটা</span>

বগুড়ার একটি ক্ষুদ্র শিল্প কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন দুপচাঁচিয়ার আমেনা বেগম। বেতন পান মাত্র ৩০০০ হাজার টাকা। এবার বোনাস পেয়েছেন ১ হাজার টাকা। এই টাকাতে সারা মাসের খরচ মিটিয়ে তাকে ঈদ মার্কেট করতে হবে। বাসায় তার ৪ বছরের মেয়ে ছাড়াও স্বামী, শ্বশুর -শাশুরি রয়েছেন। সবার মন যোগাতে তিনি এসেছেন বগুড়া শহরের সস্তা মার্কেটে। এখানে ঈদের কেনাকাটা করা যাচ্ছে সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।

ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাবেন আবুল হোসেন। এ জন্য ঢালাই কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেতনের আগাম ২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন। সোমবার ফুটপাত থেকে ছেলের জন্য ১৫০ টাকায় শার্ট, ১০০ টাকায় জুতা, মেয়ের জন্য ২৫০ টাকায় রঙিন জামা, ১২০ টাকায় স্যান্ডেল, স্ত্রীর জন্য ৩৫০ টাকায় শাড়ি এবং বাবার জন্য ৩৫০ টাকায় পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি কিনেছেন। আবুল হোসেন বললেন আমাদের ভরসা এই সস্তা মার্কেটগুলোই। কম টাকাতে সবার মন রক্ষা করা যায়। নিজেরও ভালো লাগে সবাইকে উপহার দিতে পেরে।

শহরের হকার্স মার্কেটের পেছনের গলিতে ফরিদা নামের একজন গৃহবধু একটি দোকানে নিজের জন্য শাড়ি কিনতে দর-কষাকষি করছিলেন। দোকানি ৩৫০ টাকা দাম বলছেন। ফরিদা ২২০ এর বেশি দিবে না। শেষ পর্যন্ত ২৫০ টাকায় কিনে ফেললেন শাড়িটি। পছন্দের শাড়ি কিনে ফরিদার চোখে মুখে প্রশান্তির হাসি। দোকানিও খুশি তার পন্য বিক্রি করতে পেরে। ফরিদা বললেন, কমদামে পোশাক পাওয়া যায় বলে আমাদের মতো লোকেরা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে। বড় শো-রুমে যাবার ক্ষমতা আমাদের নেই। এ কারণে এসব দোকাই আমাদের শেষ ভরসা।

এবার বগুড়া শহরের রেলওয়ে স্টেশন এলাকা, সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, ফুল মার্কেট, হকার্স মার্কেটের সামনে, শেরপুর রোডে, সার্কিট হাউজ রোডের ফুটপাতে জমে উঠেছে স্বল্প আয়ের মানুষদের ঈদের কেনাকাটা। এইখানে ছেলেদের শার্ট-গেঞ্জি-পাঞ্জাবি মিলছে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। মেয়েদের রঙিন জামা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। ছেলে-মেয়েদের জুতা-স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। লুঙ্গি-শাড়ি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে কেনাবেচা। ক্রেতাদের অধিকাংশই নিম্নবৃত্ত শ্রেণির।

হকার ওয়াসিম ছোটদের পোশাক নিয়ে দোকানে বসেছেন। বলেন, 'সারাদিনে (কেবল মাত্র তখন বিকেল) মাত্র ৫ হাজার টাকার বেচাকেনা হয়েছে। ঈদ বাজারে ৫ হাজার টাকা, কোনো টাকা। তার মতো অনেকেই বললেই বিক্রি যতোটা আশা করেছিলো ততোটা ভালো না। তারা জানায় কাপড়, নকশা ও মানভেদে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় পাঞ্জাবি, ২০০-২৫০ টাকায় শার্ট, বাচ্চাদের পোশাক ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব পোশাকের মান যেমন তেমন দেখতে কিন্তু খুব নজরকাড়া।

ফুটপাত থেকে কাপড় কিনছিলেন ফজলু মিয়া। তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। বললেন, ফুটপাতে যারা আসেন তারা মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ। এখানে সব কিছুর মোটামুটি কম দামে পাওয়া যায়। তবে দাম বেশি চাইলে মানুষ হকার্স মার্কেটে ছোটে।

শহরের সাতমাথা এলাকায় ফুটপাতের পোশাক বিক্রেতা মনির মিয়া বলেন, দিনে ভিড় করছেন গ্রাম থেকে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতারা। ইফতারের পর শহরের শ্রমজীবী ক্রেতারা। তবে সব মিলিয়ে কেনাকাটা ভালো।

বগুড়া শহরের নিউমার্কেটের সামনে থেকে শুরু করে সার্কিট হাউজ মোড় পর্যন্ত ফুটপাতে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। পাঞ্জাবি, সালোয়ার, শার্ট, গেঞ্জি, টি-শার্ট, ট্রাউজার, বাচ্চাদের পোশাক, ফ্রক এসব পণ্যই বিক্রি করা হচ্ছে এখানকার ফুটপাতগুলোতে। হকাররাই ফুটপাতের দুই তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে নিয়েছেন। তাই হাঁটার জায়গাটুকুও নেই। বিকল্প পদ্ধতি, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আবার কানে বাজে হকারদের ডাক, 'খালি তিন শ', 'খালি দুই শ'।

শহরের একটি বহুতল ভবনে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি করেন আমির হামজা। ছেলেমেয়েদের জন্য তিনি কবি নজরুল ইসলাম সড়কের একটি দোকানে জামাকাপড় পছন্দ করছিলেন। তিনি বলেন, পকেটে রয়েছে ৫০০ টাকা। বাগ্য ভালো এই দামে পোশাক মিলে গেছে। আমি খুব খুশি।

আরজু নামের একজন দোকানি বলেন, ফুটপাতে স্থায়ী ও ভাসমান মিলে ৩০০-এর বেশি দোকান রয়েছে। এর বাইরে ভ্যানগাড়িতে দোকানের পসরা সাজিয়েছেন প্রায় ৩০০ ব্যক্তি। পুলিশের তাড়া খেয়ে এসব ভ্যানগাড়ি নিয়ে দোকানিরা শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরছেন। তারপরেও টুকটাক বেচাবিক্রি হচ্ছে।

News Image
News Image
News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

Public Figures

Slide Left Slide Right
News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image

News Image